বিশ্বায়ন ও তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রসমূহ

০১.
উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন-এ দুটি প্রত্যয় আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অর্থনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও পরস্পর সন্নিহিত। উন্নয়ন বলতে সাধারণভাবে অর্থনীতি, মানব সম্পদ, প্রযুক্তি প্রভৃতির উন্নতি বোঝায়। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ যোসেফ স্টিগলিস অর্থনৈতিক উন্নয়ন বলতে মাথাপিছু আয়ের ধারাবাহিক বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পরিবর্তনকে বুঝিয়েছেন। তবে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন-অনুন্নয়ন-পরিকল্পনার তাত্ত্বিক কাঠামো সৃষ্টি হয় অর্থনৈতিক ক্রিয়াকর্মের ঘাত-অভিঘাতের বিভিন্ন সময় পর্বে। মূলত মার্কেনটাইলবাদ, মার্ক্সবাদ ও উদারনৈতিকতাবাদ- রাজনীতি ও অর্থনীতি সম্পর্কিত এ তিনটি তত্ত্বের আবহ থেকেই উন্নয়ন ধারণার জন্ম। মার্কেনটাইলবাদীরা বলে থাকেন যে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ অর্থনৈতিক কার্যক্রমের জন্য একচি অবকাঠামো তৈরী করে।মার্ক্সবাদী অর্থনীতিবিদরা এর বিপরীতে বলে থাবেন যে বরং অর্থনীতিই রাজীতিকে প্রভাবিত ও আলোড়িত করে। অন্যদিকে উদারবাদীরা দেখান যে বাজারেরই স্বয়ং এক ধরণের অর্থনৈতিক গতিশীলতা রয়েছে যা উন্নয়ন বা অনুন্নয়নকে প্রভাবিত করতে পারে। পরস্পর বিরোধী এ তিন আদর্শিক মতবাদের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন অর্থনৈতিক ক্রিয়াকর্মের আধুনিক গতিপ্রবাহ। তৃতীয় বিশ্ব তার নিজের প্রয়োজন, অবকাঠামো, সম্পদ, প্রযুক্তি, মানব সম্পদ, ব্যবস্থাপনার দক্ষতা প্রভৃতির উপর ভিত্তি করে নিজ পদ্থতি গ্রহণ করেছে। তবে মুষ্টিমেয় দেশ ছাড়া তেমন কেউ কাঙ্খিত মানের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারেনি। এর কারণ হিমেবে অনেকেই উন্নত বিশ্বের পন্ডিত ও অর্থনীতিক কর্তৃক প্রদর্শিত উন্নয়ন ধারণার স্বার্থপরতাকে দায়ী করেছেন। তৃতীয় বিশ্বের এসব উন্নয়নশীল-অনুন্নত দেশের প্রকৃত উন্নয়ন আজ খুবই প্রাসঙ্গিক। তবে তা কোন পথে?
০২.
উন্নয়ন ধারণার ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত দেখে নেয়া যাক। অর্থশাস্ত্রের বিভিন্ন দার্শনিক ধারা বিভিন্নভাবে উন্নয়নের তািত্ত্বিক কাঠামো তৈরি করে এবং উন্নয়নকে নংজ্ঞায়িত করে। অর্থনীতির ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যায় যে উন্নয়ন বিষয়টি এর একটা গুরুত্বপূর্ণ ধারা বা স্বতন্ত্র বিষয় কিংবা একটা একাডেমিক ধারা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে অনেক পরে। সুনির্দিষ্টভাবে বলা যায় আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে উন্নয়ন ধারণার আবির্ভাব ঘটে। আর তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা শুরু হয় ৫০ এর দশকে।কারণ এর আগ পর্যন্ত তৃতীয় বিশ্রের উন্নয়ন বলতেই ছিল উপনিবেশিক উন্নয়ন। তখন এসব দেশের অধিকাংশই ছিল ইউরোপীয় রাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত। উপনিবেশিক উন্নয়ন ছিল একটি সাম্রাজ্যবাদী ইস্যু ; তা কোনক্রমেই কলোনীর উন্নয়নে নিবেদিত প্রাণ ছিলনা। ১৯৫০ এর দশকে উপনিবেশিক শাসন থেকে বিভিন্ন দেশের মুক্তিলাভের পর আন্তর্জাতিক পরিসরে ব্যাপকভাবে উন্নয়ন গবেষণা শুরু হয়। আফ্রিকা ও এশিয়ার অনেক দেশ নতুন জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে এবং উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে তারা সোচ্চার হয়। তাছাড়া স্নায়ুযুদ্ধকালীন মার্কিন ও সোভিয়েত ব্লক একে অপরকে অসুবিধায় ফেলতে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের সাথে তাদের সম্পর্ক নিবিড় করতে সচেষ্ট হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গড়ে ওঠে বিভিন্ন তত্ত্ব ও মতবাদ। সঙ্গত কারণেই তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়ন এগুলোর মধ্যে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হিসেবেই দেখা দেয় ।
০৩.১
আধুনিকীকরণ তত্ত্ বা উদারনৈতিকতাবাদ: (ক) অর্থনৈতিক উদারবাদীরা পশ্চিমা দেশে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধত্তোর ব্যাপক পরিসরে উন্নয়ন গবেষণা শুরু করেন। তাদের নানামুখী গবেষণার ফলাফলকে মোটাদাগে আধুনিকীরণ তত্ত্ব হিসেবে দাড় করানো হয়। এর মৌলিক নীতিমালা হচ্ছে যে পশ্চিমা উন্নত দেশগুলো উন্নয়নের জন্য প্রাথমিকভাবে যে পদ্থতি গ্রহণ করেছিল তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নের জন্য সেই একই পদ্ধতি গ্রহণ করা। আর এর মাধ্যমে তৃতীয় বিশ্বের সনাতন,প্রাক-শিল্পায়িত, কৃষিভিত্তিক সমাজের প্রগতিশীল উত্তরণ ঘটবে। যা তাকে পরিণত করবে আধুনিক, শিল্পায়িত ও সমদ্ধ দেশে। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো নির্দিষ্ট যেসব বৈশিষ্টের কারণে পশ্চাৎপদ বা শিল্পে অনুন্নত তাকে উন্নত, আধুনিক ও শিল্পায়িত করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেয়া দরকার তার দিক নির্দেশনা প্রদান করাই ছিল এসব উন্নয়ন তত্ত্বের মূল বিষয়। (খ) অর্থনৈতিক উদারবাদীদের মতে তৃতীয় বিশ্বের কেন্দ্রীয় সমস্যা হলো পুঁজির অভাব। প্রখ্যাত তাত্ত্বিক রস্ট্রো বলেন যে তৃতীয় বিশ্বে অনেক ধরণের সম্পদ আছে যেগুলো থাকে অব্যবহৃত। কারণ উন্নয়নের জন্য একটা গুরুত্ত্বপূর্ণ উপাদান এসব দেশে অনুপস্থিত, যার যোগান দেয়া সম্ভব হলে এসব দেশ দ্রুতগতিতে উন্নয়নের দিকে ধাবিত হবে। আর এই অনুপস্থিত উপাদান হলো পুঁজি। অন্য সম্পদ থাকলেও পুঁজির অভাবে তা কাজে লাগছে না। বলা দরকার যে পুঁজি যোগানের এই তত্ত্ব বৈদেশিক সাহায্য সম্পর্কিত তত্ত্ব দাঁড় করানোর ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। মূলত মার্শাল পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধত্তোর ইউরোপকে পুনর্বাসনের জন্য যে তহবিল যোগান দেয়া হয় তার ধরণই পরবর্তী সময়ে বিদেশী সাহায্য নামে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীকালে এই বিদেশী সাহায্যকে একটা লাভজনক বিনিয়োগ ও তৃতীয় বিশ্বের অর্থনীতিতে অতি প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্র ব্যবহার করতে থাকে।ফলে বৈদেশিক সাহায্য ও উন্নয়ন এ দুয়ের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। মূলবক্তব্যটা হলো পুজিঁবাদী পশ্চিমা হচ্ছে উন্নত আদর্শ এবং তৃতীয় বিশ্ব মডেল হিসেবে এই পশ্চিমকে বিবেচনা করবে। এই তত্ত্বেব উন্নয়ন কাঠামোকে আধুনিকীকরণ প্যারাডাইম বলা হয়। এই প্যারাডাইমের মূলকথা হলো বৈদেশিক সাহায্য, বিশেষজ্ঞ ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে তৃতীয় বিশ্বকে সাহায্য করবে পশ্চিম এবং এর মাধ্যমে তৃতীয় বিশ্ব সেই প্রতিকৃতিতে অহ্রসর হবে। অর্থ্যাৎ তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নের প্রধান পথ হচ্ছে পুঁজিবাদী ইউরোপ বা আমেরিকার সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করা। যতটা দক্ষতার সাথে অনুসরণ করা হবে ততবেশি উন্নয়ন সম্ভব হবে।বৈদেশিক সাহায্যের ক্ষেত্রে “দুই ঘাটতি তত্ত্ব” অনুযায়ী তৃতীয় বিশ্বে দু’ধরনের ঘাটতি প্রকট: সঞ্চয়-বিনিয়োগ ঘাটতি ও আমদানি-রপ্তানি ঘাটতি। বলা হয় যে তৃতীয় বিশ্বে সঞ্চয়ের তুলনায় বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশী। ফলে এখানে একটা বড় ব্যাবধান আছে। আরেকটি হচ্ছে আমদানির তুলনায় রপ্তানি কম। সুতরাং একটা বাণিজ্য ঘাটতি এখানে প্রকট থাকে। এক্ষেত্রে তৃতীয় বিশ্ব যদি বৈদেশিক সাহায্য নিয়ে এ দুটি ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম হয় তাহলে সে আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হতে পারবে। এক্ষেত্রে সনাতন সমাজ কতগুলো পশ্চিমা আধুনিক ফ্যাকটর অনুসরণ করে আধুনিক সমাজে রূপান্তরিত হতে পারে:
-রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত বাজার অর্থনীতি
-অর্থনৈতিক বিনিয়োগের ক্রমবর্ধনশীল হার
-এবং প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ ( এফ ডি আই)
(গ) আমরা জানি যে আধুনিকীকরণ তত্ত্বের প্রয়োগে তৃতীয় বিশ্বের যে বাস্তব অভিজ্ঞতা তা এসব তত্ত্বের সিদ্ধান্তের সাথে মেলে না। ১৯৬০ ও ৭০ এর দশকে এ তত্ত্ব ও প্যারাডাইমকে চ্যালেঞ্জ করা হলো । তৃতীয় বিশ্বের অগ্রগতির লক্ষণ না দেখে অনেকেই হতাশ হলেন। অথচ একই সময়ে উন্নত বিশ্বের প্রবৃদ্ধির হার নজিরবিহীনভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে মানুষের অসন্তোষ বুদ্ধি পায়।
০৩.২
নির্ভরশীলতাবাদ বা নির্ভরতাবাদী তত্ত্ব: (ক) উদারবাদী তত্ত্ব ও প্যারাডাইমকে চ্যালেঞ্জ করে যুক্তরাষ্ট্র , ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকায় নব্য মার্ক্মবাদী অনুন্নয়ন তত্ত্ব বা অনুন্নয়ন ও নির্ভরতা তত্ত্ব এর উদ্ভব ঘটে সংক্ষেপে একে নির্ভরতা তত্ত্ব বলা হয়। উদারবাদীরা উন্নয়ন পদ্ধতির সূচনা হিসেবে সনাতন সমাজ কে ধরে থাকেন। কিন্তু এই তত্ত্ব মতে প্রথম কথা হচ্ছে অনুন্নয়ন। আর অনুন্নয়ন এসন একটি অবস্থা, যা সকল দেরশই কোন না কোন সময় বিদ্যমান ছিল। বলা চলে সারাবিশ্বে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন জৈবিকভাবে সংযুক্ত, একটার সাথে আরেকটা নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। আজকে ইউরোপ বা আমেরিকার প্রবৃদ্ধি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করলে তৃতীয় বিশ্বের অনুন্নয়ন একটা কারণ হিসেবে আমরা পাই। অর্থ্যাৎ যে কারণে তৃতীয় বিশ্ব অনুন্নত ঠিক সে কারণেই প্রথম বিশ্ব উন্নত। (খ) এই পারস্পারিক সম্পর্ক দেখাতে গিয়ে তাত্ত্বিকেরা উপনিবেশিক ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখালেন যে, ইউরোপের শিল্পবিপ্লব, আমরিকার শিল্পায়ন প্রভৃতির পেছনে তৃতীয় বিশ্ব থেকে সম্পদ সংগ্রহ-লুণ্ঠন একটা গুরুত্ত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। প্লান্টেশন অর্থনীতির সম্পদ ল্যাটিন আমেরিকা থেকে চলে গেছে আমেরিকা ও কানাডায়। অন্যদিকে একথা সর্বজন বিদিত যে ভারত-বাংলার সম্পদ ব্রিটিশ শিল্পবিপ্লবের প্রধান উপাদান ছিল। আফ্রিকার ক্ষেত্রে শোষণ-লুণ্ঠন আরো বেশী পরিমাণে হয়েছে।পল ব্যারেন, পল সুইজ, সমীর আমীন প্রমুখ এই মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে বলেন যে পুঁজিবাদী কেন্দ্র দেশগুলোর সাথে অনুন্নত দেশগুলোর ঘনিষ্ঠতার মাধ্যমে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এটি একটি মিথ। কারণ অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে এর সাধ্যমে অনুন্নত দেশ একটা জাল বা ফাঁদের মধ্যে পতিত হচ্ছে। যার ফলে এসব দেশের উন্নয়ন সম্ভাবনা বিপর্যস্থ হয়েছে; ানুন্নয়ন ও ধ্বংসাত্নক নুন্নয়ন স্থায়ী রুপ সনয়েছে। কেন্দ্র হচ্ছে এখানে পুঁজিবাদী পশ্চিম যে গুলো এখন জি-এইট বা ওইসিডি তে ঐক্যবদ্ধ। এই কেন্দ্রের অর্থনৈতিক নীতি ও চাহিদার উপর নির্ভর করে প্রান্তস্থ দেশগুলোর বা তার চারিদিকে ঘিরে যে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো তাদের গতিপথ নির্ধারিত হয়। তৃতীয় বিশ্বের ভবিষ্যৎ কি হবে, কোন ধরনের বিনিয়োগ হবেতার অনেক কিছুই নির্ভর করে তাই এই কেন্দ্র দেশগুলোর গতিপ্রকৃতির উপর।
০৩.৩
মডারেট নির্ভরশীলতাবাদ: ফার্নান্দো কার্দোসো, ফালেতো প্রমুখ পুঁজিবাদী বিশ্ব বাজার ব্যবস্থাপনাকে তুলনামূলকভাবে কম সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে পুঁজিবাদী পশ্চিমা দেশের উপর নির্ভরশীলতার মাধ্যমেও তৃতীয় বিশ্বের কিছু কিছু উন্নয়ন সম্ভব। রেডিক্যাল নির্ভরশীলতা তত্ত্ব ৭০ এর দশকেই তার আবেদন হারিয়ে ফেলে। জনপ্রিয় হয়ে ওঠে মডারেট মতবাদ। এ সময় এ মতবাদের ছত্র্র্র্রছায়ায় তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পদ্ধতি গৃহীত হয়: (ক) সরাসরি সমাজতান্ত্রিক মডেল নিয়ে চীন, উত্তর কোরিয়া, ভিয়েতনাম ও কিউবা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যায়। (খ) দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, হংকং, সিঙ্গাপুর,থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া নয়া শিল্পোন্নত অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করে। (গ) পুঁজিবাদী কেন্দ্রীয় অস্তিত্ত্বকে অস্বীকার করে এবং সরাসরি সমাজতান্ত্রিক কাঠামো গ্রহণ না করে মিশর, ইথিওপিয়া,তাঞ্জানিয়া, নিকারাগুয়া,এ্যাঙ্গোলা,সুদান ও লিবিয়া একটা নতুন ” স্টেট স্পন্সরড” উন্নয়ন কৌশল তৈরী করে। (ঘ) বাকি দেশগুলো আধুনিকীকরণ প্যারাডাইমের অধীনস্ত ও দূর্বল প্রান্ত হিসেবে কাজ করছে। আমাদের বাংলাদেশ এরই একটি দেশ। উল্লেখ্য যে দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, হংকং, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখলেও পুরোপুরিভাবে তাদের অনুসারী নয়। এদের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ভূসিকাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একে আমরা রাষ্ট্র নিয়স্ত্রিত পুঁজিবাদী উন্নয়ন বা অধিকতর মডারেট নির্ভরতাবাদ বলে অভিহিত করতে পারি।
০৩.৪
বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানিক ব্যাবস্থা: তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা পর্যালোচনায় বৈশ্বিক বিভিন্ন সংস্তা যেমন- বিশ্বব্যাংক, আই এম এফ এবং গ্যাট-ডব্লিউ টি ও এর উদ্ভব বেষ তাৎপর্যপূর্ণ। উন্নয়ন সমস্যা বা উন্নয়ন সম্ভাবনা আলোচনা করতে গেলে যে কোন নীতি বা কৌশল প্রসঙ্গে এগুলোর যৌক্তিক আগমন ঘটে।১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ক্রমান্বয়ে একটা পর্যায়ে গত ৫০ বছরের কিছু বেশী সময় ধরে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় বৈশ্বিক সরকারের একটা কাঠামো তৈরী করেছে। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ গঠিত হওয়ার সময় কেইনমীয় অর্থনীতির প্রধান কেইনস আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। কিন্তু আমরিকার বিরোথিতায় প্রতিষ্ঠিত হলো গ্যাট যার মাধ্যমে ট্রেড ও ট্যারিফ সংক্রাস্ত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।১৯৯০ সালেই এ প্রক্রিয়া থেকেই জন্মলাভ করল ডব্লিউ টি ও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর উন্নয়ন পরিকল্পনা ও কৌশলের বিবর্তন বুঝতে হলে এই প্রাতিষ্ঠাসিক ব্যাবস্থাপনার বিষয়টি বুঝতে হবে। সেইসাথে গুরুত্ত্বের সাথে বিবিচনা করতে হবে জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এনজিওকে। এখন বিশ্বে একদিকে এই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আছে আরেকদিকে আছে রাষ্ট্রীয় সরকার। প্রশ্ন হলো উন্নয়ন-অনুন্নয়ন প্রসঙ্গে পরিকল্পনা প্রণয়নে, কৌশল বা গতিমুখ নির্ধারণে কার ভূমিকা কতটুকু তা খতিয়ে দেখা। তবে তৃতীয় বিশ্ব এ সব সংস্থার নানা শর্ত-পরিমিতি ও মোড়লীপনায় যার পর নাই ত্যক্ত-বিরক্ত।
০৩.৫
আধুনিক মার্কেন্টাইলিজম: (ক) বিংশ শতকের ৮০ ও ৯০ দশকের মাঝামাঝ সময়ে উন্নয়ন প্রসঙ্গটি সার্কেন্টাইল মতধারার দিকে ঝুঁকে পড়ে। তবে এ সময় ও পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক উদারবাদ ও নির্ভরতাবাদের মত বিস্তৃত ও সুস্পষ্টভাবে এ তত্ত্বের কাঠামো গড়ে ওঠেনি। কিন্তু উন্নয়ন সম্পর্কিত মার্কেন্টাইল ঐতিহ্যের ব্যাপকতা ও বৈচিত্র সাম্প্রতিক সময়ে নতুন গতিধারার সূচনা করে। মূলত এটি উদারবাদ ও নির্ভরতাবাদের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত করে। উদারবাদীরা উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য বিশ্ব বাজার সমন্বিতকরণের উপর জোর দেন। নির্ভরতাবাদীরা বিশ্ব বাজারের সাথে উন্নয়নশীল দেশের সম্পর্ক ছিন্ন করার পক্ষে মত দেন। এক্ষেত্রে মার্কেণ্টাইলিস্টরা মধ্যম পন্থা অবলম্বনের প্রস্তাব দেন। (খ) ১৯৫০ এর দশকে রাউল প্রেবিশ, গার্নার মিরডাল প্রমুখ প্রতিযোগীতামূলক সুবিধার ভিত্তিতে পরিচালিত মুত্ত বাণিজ্যের বিপক্ষে মত দেন। কারণ এ সময়ে অর্থনৈতিক লাভের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলো ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছিল।অন্যদিকে হেটেন ১৯৭০ এর দশক থেকে তানজানিয়া, ঘানা, জ্যামাইকা ও নিকারাগুয়ায় নির্ভরতাবাদী তত্ত্বের ভিত্তিতে পরীক্ষা চালিয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে তার কৃতকার্যতার অনুপস্থিতি দেখতে পান। আধুনিক মার্কেন্টাইলিস্টরা দেখান ভাবছেন উন্নয়ন হবে-এ নেভিগেশন অর কম্প্রমাইজ বিটউইন ইকনমিক অটোনমি এ্যান্ড ইনটিগ্রেশন ইনটু দ্য গ্লোবাল ক্যাপিট্যালিস্ট ইকনমি। পূর্ব এশীয় দেশগুলো বিশেষত জাপানের অর্থসৈতিক উন্নয়নের সফলতা এই কৌশলের বাস্তব প্রমাণ পেশ করে। এ ঘরানার পন্ডিতেরা মনে করেন যে বাজার ও রাষ্ট্রের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। উদারবাদীরা বলে থাকেন মুক্ত বাজারে রাষ্ট্রের সর্বনিম্ন পর্যায়ের হস্তক্ষেপ অর্থনেতিক উন্নয়নের জন্য সর্বোত্তম পন্থা । এর জবাবে মার্কেন্টাইলিস্টরা বলেন যে এতে করে বাজারের দক্ষতায় মারাত্নক ফাটল ধরতে পারে। অন্যদিকে এটাও সত্য যে উৎপাদনকারী কোন ফার্ম তার নিজের প্রতি সরকারের অযথা বা মাত্রাতিরিক্ত হস্তক্ষেপ কামনা করবে না। এ ক্ষেত্রে সামান্য সরকারী হস্তক্ষেপ রাখা যেতে পারে। যেমন দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানের উন্নয়ন সফলতা কাঙ্খিত উৎপাদন অবকাঠামো গড়ে তুলতে সরকারের সক্রিয় কর্মপ্রচেষ্টা এর মাধ্যমে সম্ভবপর হয়েছে। গর্ডন হোয়াইট বলেন যে বাজারে রাষ্ট্রের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ আমলাতান্ত্রিক ব্যার্থতা সৃষ্টি তৈরি করতে পারে। তাছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন তাৎপর্যপূর্ণ নীতির প্রয়োজন নেই- এ যুক্তিও তিনি মানতে নারাজ। কারণ এতে বাজারে ধ্বস নামতে পারে।যেমন- যেখানে বিভিন্ন উৎপাদকের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি পূর্ণ প্রতিযোগীতার কোন মনোভাব নেই, সেখানে একচেটিয়া কারবারের উদ্ভব হয়। তাছাড়া রাষ্ট্রীয় নীতিমালার অভাবে বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যাবলি যেমন-দূষণ প্রভৃতির সৃষ্টি হতে পারে। ফলে এসব তাত্ত্বিকেরা একটা উদার ও পরিস্থিতি উপযোগী একটা রাষ্ট্রীয় নীতিমালার আকাঙ্খী। তবে বাজার ও রাষ্ট্রের মধ্যে ভারসাম্য সময় ও পাত্রভেদে ভিন্নতর হতে পারে। (গ) উন্নয়ন ভাবনায় মার্কেন্টাইলিস্ট মিডল রোড পলিসির আরেকটি উদাহরণ হলো বিভিন্ন ট্রান্সন্যাশনাল কর্পোরেশনের (টি এন সি )ভূমিকা। উদারবাদীরা এগুলোকে ইঞ্জিন অর গ্রোথ ও দক্ষিণের অগ্রগতির প্রধান নিয়ামক ভেবেছেন। নির্ভরতাবাদীরা রলে থাকেন যে এটা দ্য ডেভিল ইনকর্পোরেটেড। মার্কেন্টাইলিস্টরা বলছেন তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নের জন্য এগুলোর দরকার থাকলেও এক্ষেত্রে কতগুলো শর্ত প্রযোজ্য। যেমন -স্থানিকভাবে শিল্পে দুর্বল রাষ্ট্রে টিএনসিগুলোই হবে একমাত্র কারবারি। অন্যদিকে স্থানিকভাবে কিছুটা শিল্পসমুদ্ধ শক্তিশালী রাষ্ট্রে এগুলো প্রযুক্তিগতভাবে বা অন্যভাবে সেদেশের স্থানীয় শিল্পোৎপাদনের মানকে উন্নত বা সাহায্য করতে বিনিয়োগ করতে পারে। সামগ্রিকভাবে হোস্ট ইকনমিকে উন্নত করতে ফলদায়ক সহযোগীতা করতে পারে। তবে টিএনসির সামগ্রিক সফলতা প্রশ্নসাপেক্ষ। ইউএনডিপির এক হিসেবে সারা পৃথিবীর শতকরা ৫০ ভাগ মানুষের মোট যা আয় তা বিশ্বের উচ্চবিত্ত ৩৫৮ জন মানুষের আয়ের সমান। দু:খজনক হলেও সত্য যে এরা বিভিন্ন টিএনসির প্রধান প্রধান ব্যক্তিবর্গ। (ঘ) এ তত্ত্বের কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে।এ মত অনুযায়ী দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর জন্য দরকার একটি স্বচ্ছ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাজনৈতিক প্রশাসনিক দক্ষতা। তা নাহলে তারা আধুনিক সরল রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ ও নীতিমালা তৈরি করতে পারবে না। উল্লেখ্য যে পূর্ব এশীয়ায় এ তত্ত্বের উন্নয়ন কৌশল অনুসরণ করা হয়। কিন্তু সরেনসেন ইভান প্রমুখ দেখান যে দক্ষিণের অধিকাংশ দেশ খুব বেশী শক্তিশালী নয়। সাব-সাহারান আফ্রিকার দুর্বল বাষ্ট্রগুলোতে দুর্নীতি ও নিজ স্বার্থসন্ধানী রাষ্ট্রীয় শহরগুলো উন্নয়নের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরী করে।এ রকম পরিস্থিতিতে আধুনিক মার্কেন্টাইলিজম খুবই সীমিত আশাবাদের সঞ্চার করতে পারে। তাছাড়া মার্কেন্টাইল রাজনীতি উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।
০৩.৬
নয়া উপনিবেশবাদ: কোন কোন পন্ডিত পুঁজিবাদী বিশ্বের সাম্প্রতিক উন্নয়নের বিভিন্ন তত্ত্ব ও ফর্মূলার মধ্যে নয়া উপনিবেশিক বৈশিষ্ট্য খুঁজে পান। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন প্রসঙ্গে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তত্ত্বগুলোর সাথে নয়া উপনিবেশবাদের একটি ঘনিষ্ঠ সস্পর্ক রয়েছে। বলা হয় যে বিশ্ব পুঁজিবাদী অবিছিন্ন শোষণ প্রক্রিয়ায় সাম্রাজ্যবাদ নয়া উপনিবেশিক শোষণ চালায়। এই শোষণের ব্যাপকতা সারা বিশ্বে এখন শ্রেণীদ্বন্দ্ব বিস্তৃত করেছে। নয়া উপনিবেশিক শোষণ পদ্ধতির বিভিন্ন উল্লেখোগ্য দিক হলো-
(ক) সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো বিভিন্ন দেশে তাদের মিশন নিয়োজিত রাখে, যা প্রত্যক্ষভাবে সেসব দেশের সরকার ও অর্থনৈতিক প্রক্রিয়াকে নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে রাখে।
(খ) অনুন্নত দেশের উন্নয়নের জন্য সাম্রাজ্যাদী দ্রেমসমূহ তাদের নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন সংস্থা যেমন- বহুজাতিক কোম্পানী, ফোর্ড ফাউন্ডেশন, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, উইএস এইড, বহুজাতিক ব্যাংক ইদ্যাদির মাধ্যমে এসব দেশে পুঁজি ুবনিয়োগ কমে শর্তাধীনে ঋণ দেয়, ব্যাংকিং পদ্ধতি ও ঋণদান পরিশোধ প্রক্রিয়া, শিক্ষা গবেষণা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে ; প্রকৃতপক্ষে যে কার্যক্রমগুলো অনুন্নত দেশের বিভিন্ন ধরনের সম্পদ পাচার করে নিয়ে যায়।
(গ) সমন্বিত কনসোর্টিয়ামের সাহায্যের মাধ্যমে গ্রহীতা দেশের উন্নয়ন ও ব্যাবসাবাণিজ্যের উপর প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করা হয়। এসব সাহায্যের বিভিন্ন শর্তের বেড়াজালে গহীতা দেশ মাত্র শতকরা ৩০ ভাগ পায়, কিন্তু তা পরিশোধ করতে হয় পুরো শতভাগ এবং সেই সাথে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ।
(ঘ)বিভিন্ন জাতি/রাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্ব, বিভক্তি, যুদ্ধাতংক, যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করে অস্ত্র বিক্রয় এবং বাণিজ্যিক সুবিধা ও নিয়ন্ত্রণ সৃষ্টি করা হয়।
(ঙ) গ্রহীতা দেশগুলোর বাজেট তৈরীতে তারা মুখ্য ভূমিকা পালন কারে।
(চ) অনুন্নত দেশগুলোতে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তারা উন্নতমানের ধান বীজ,সার, কারিগরি সহায়তা দেয়। মাথাভারি এসব ব্যাবস্থা ঋণের বোঝা বাড়ায়। শোষণের পথ প্রশস্ত করে। উন্নয়ন হয় না।
(ছ) শিক্ষাব্যাবস্থায় অত্যধিক প্রভাব থাকার কারণে শিক্ষিত মানুষের অধিকাংশই পদলেহী দাস হয়ে পড়ে। মেধাও সাম্রাজ্যবাদী পুঁজির অধীনস্ত হয়ে পড়ে । বিক্ষত দেশগুলোর বঞ্চিত মানুষগুলো গিনিপিগ হিসেবে ব্যাবহৃত হয়।
(জ) ভূমি ও মানুষ ব্যাবহৃত হয় মুনাফা সৃষ্টি বা গবেষণার উপাদান হিসেবে। তাদের সাহায্য করে এসব দেশেরই মুল জনগণ থেকে বিছিন্ন একশেণীর শিক্ষিত মানুষ যারা প্রশাসন, অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে।
০৪.
উন্নয়ন-অনুন্নয়ন কেন্দ্রিক বিভিন্ন কাঠামো বিশ্বের মানুষকে সঠিক উন্নয়নের পথে পরিচালিত করতে একবারেই কম সফলতার সন্ধান দিয়েছে। ১৯৯৬ সালে ইউএনডিপির এক জরিপে দেখা যায় যে পৃথিবীর ৮০০ মিলিয়ন মানুষ ঠিকমত খাবার পায়না এবং প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মানুষ অপুষ্টির শিকার। অর্থনৈতিক উদারবাদীদের এ দাবি সত্য যে প্রবৃদ্ধি ও আধুনিকীকরণ ত্বরাণ্বিত করার অন্যতম শক্তিশালী উপাদান হচ্ছে একটি মুক্ত বাজার অর্থনীতি। কিন্তু একথা সত্য যে-এ্যান আনরেগুলেটেড মার্কেট উইল মোর আনলেস অটোমেটিক্যালি লিড টু অপটিমাম ডেভেলপমেন্ট ফর ইনডিভিজুয়ালস এ্যান্ড স্টেটস ইন দ্য লং রান। নির্ভরশীলতাবাদীদের মতে, তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নের জন্য আত্ননির্ভরশীলতাই উৎকৃষ্ট পন্থা। কিন্তু তাদের এ দাবি অগ্রহনযোগ্য যে বিশ্ববাজারের সংহতি অনুন্নয়নের পথ দেখায় ; উন্নত বা পশ্চিমা দেশগুলো পুঁজিবাদী শোষক ছাড়া আর কিছুই নয়। আধুনিক মার্কেন্টাইলিজম এ ক্ষেত্রে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করলেও স্ব-চালিত ও অতি দুর্নীতিগ্রস্থ শহর বিশিষ্ট দেশগুলোর জন্য উন্নয়ন সমাধান দিতে ব্যর্থ হয়। তাছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও নয়া উপনিবেশবাদ এসব তত্ত্বকে সরাসরি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করে। তবে উন্নয়ন প্রসঙ্গে স্থান ও সময় খু্বই গুরুত্বপূর্ণ। বলা হয় – দ্য ইউজফুলনেস অব দ্য ডিফরেন্ট থিওরেটিক্যাল ইনসাইটস উইল মোস্ট প্রোবাবলি ভ্যারি অ্যাক্রস টাইম এন্ড স্পেস এ্যাজ ওয়েল। সার্বিক দিক বিবেচনায় বলা যায় যে, উল্লিখিত বিভিন্ন মতধারার ইতিবাচক দিকগুলো গ্রহণ করে ও উত্তরোত্তর আরো গবেষণা চালিয়ে তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়ন-অনুন্নয়ন সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।

Comments

  1. How to make money in slot machines from scratch: Work of the
    ‎How to make money in septcasino slot machines from scratch · ‎How หาเงินออนไลน์ to make money from slot machines · ‎How to make money in slot machines from scratch · ‎How to make money in slot machines choegocasino · ‎How to make money in slot machines from scratch · ‎What does money in slot machines from scratch

    ReplyDelete

Post a Comment